Connect with us

More

শিশুটি কাঁদছিল, পাশেই পড়ে ছিল ফিডার আর কিছু কাপড়

Published

on

92c003f00d985fde67a770289645b9d0 scaled

ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল সাতটা। প্রতিদিনের মতো ব্যাংকের মূল ফটকটি খুলে দিয়ে দোতলায় চলে যান নিরাপত্তাকর্মী মোস্তফা ফকির। মিনিট পাঁচেক পরই হঠাৎ তাঁর কানে আসে একটি শিশুর কান্নার শব্দ। শুরুতে গুরুত্ব দেননি মোস্তফা। কিন্তু কান্নার আওয়াজ থামছিলই না। একপর্যায়ে নিচে নেমে আসেন মোস্তফা। ফটকের দিকে তাকাতেই দেখেন, একটি কন্যাশিশু পড়ে আছে সিঁড়ির নিচে মেঝেতে। তার বয়স আড়াই-তিন মাস। পরনে একটি স্যান্ডো গেঞ্জি ও হাফপ্যান্ট। পাশেই পড়ে আছে দুধের ফিডার আর কিছু কাপড়। শিশুটি তখনো কেঁদেই চলেছে।

দেখেই হকচকিত অবস্থা মোস্তফার। শিশুটির মায়ের খোঁজে এদিক-সেদিক ঘোরেন। কিন্তু কাউকে না পেয়ে পরে খবর দেন কোনাবাড়ী থানায়। পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশুটির পরিচয় মেলেনি।

দুপুরের দিকে শিশুকে আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হয় রাজধানীর উত্তরার একটি শিশুসদন কেন্দ্রে। বর্তমানে শিশুটি সেখানেই আছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকার প্রিমিয়ার ব্যাংকের নিচতলা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। ব্যাংকটির নিরাপত্তাকর্মী মোস্তফা ফকিরের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। মোস্তফা বলেন, ব্যাংকটির অফিসকক্ষ দোতলায়। তিনি ও তাঁর সহকর্মী সানোয়ার কাজ করেন নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে। তাঁরা থাকেন দোতলায়। প্রতিদিন অফিস শেষে নিচতলায় ফটক বন্ধ করে দোতলায় চলে যান। এরপর সকালে আবার খুলে দেন ফটক। প্রতিদিনের মতো আজ সকাল সাতটার দিকে ফটক খুলে দোতলায় যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এ ঘটনা ঘটে।

মোস্তফা আরও বলেন, ‘গেট খোলার সময় কেউই ছিল না। কিন্তু গেটটা খুলে ওপরে যেতেই কেউ এসে বাচ্চাটাকে রেখে চলে যান। আমরা তৎক্ষণাৎ আশপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি, কিন্তু কাউকেই পাওয়া যায়নি। এরপর বাধ্য হয়েই আমরা পুলিশে খবর দিই।’

সকাল আটটার দিকে শিশুটিকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয় কোনাবাড়ী থানার পুলিশ। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শিশুটিকে সুস্থ বলে জানায় চিকিৎসক। পরে দুপুরের দিকে শিশুকে আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হয় রাজধানীর উত্তরার একটি শিশুসদন কেন্দ্রে। বর্তমানে শিশুটি সেখানেই আছে।

উপপরিদর্শক তাপস কুমার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে শারীরিকভাবে সুস্থ বলে জানায়। এরপর আমরা শিশুটির পরিচয় না পাওয়ায় শিশুটিকে শিশুসদন কেন্দ্রে রাখার অনুমতি প্রার্থনা করি। এরপর আদালত আমাদের অনুমতি দিলে দুপুরের মধ্যেই সদন কেন্দ্রে পাঠাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘কে বা কারা শিশুটিকে ফেলে গেছে, তা এখনো জানা যায়নি। আমরা আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করছি। আশা করছি, খুব শিগগিরই সন্ধান পাওয়া যাবে।’

Trending