More
স্ট্রোকের লক্ষণ চেনার উপায় ‘বি ফাস্ট’
![স্ট্রোকের লক্ষণ চেনার উপায় ‘বি ফাস্ট’ 1 122599e307317e21dfb7c2d92ce53186](https://www.vknews24.com/wp-content/uploads/2022/11/122599e307317e21dfb7c2d92ce53186.jpg)
স্ট্রোক মস্তিষ্কের মারাত্মক রোগ। এতে মস্তিষ্কের রক্তনালিতে জটিলতা দেখা দেয়। হঠাৎই কার্যকারিতা হারায় মস্তিষ্কের একাংশ। মস্তিষ্কের কোষ অত্যন্ত সংবেদনশীল। অক্সিজেন ও শর্করা সরবরাহে একটু হেরফের হলেই কোষগুলো মারা যেতে শুরু করে। যদি মস্তিষ্কের কোনো অংশের রক্ত চলাচল বিঘ্নিত হয় (আঘাতজনিত ছাড়া) এবং তা ২৪ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয় অথবা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোগী মৃত্যুবরণ করে, তাহলে এ অবস্থার নাম স্ট্রোক।
স্ট্রোকের কারণে প্যারালাইসিসের (পক্ষাঘাত) মতো মারাত্মক উপসর্গ দেখা যায়, কিছু স্ট্রোকে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। স্ট্রোক হলে শরীরের যেকোনো এক দিকে হাত-পা ও মুখমণ্ডল প্যারালাইসিস হয়ে থাকে। মস্তিষ্কের যেসব অংশ শরীরের যেসব অংশকে নিয়ন্ত্রণ করে, সেসব অংশ স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে শরীরের ওই স্থানগুলো অকেজো হয়ে পড়ে। স্ট্রোকের ধরন ও পরিমাপ অনুযায়ী প্যারালাইসিসের ধরন ও পরিমাপ নির্ভর করে।
স্ট্রোকের লক্ষণ
স্ট্রোকের লক্ষণ ও উপসর্গ সহজে চেনার জন্য বিশ্বব্যাপী ‘বি ফাস্ট’ বাক্যবন্ধ ব্যবহার করা হয়।
বি অর্থ ব্যালেন্স বা ভারসাম্য। হঠাৎ ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়া।
ই অর্থ আই বা দৃষ্টি। হঠাৎ দেখতে সমস্যা।
এফ অর্থ ফেস বা মুখমণ্ডল। হঠাৎ মুখের একদিক বাঁকা হয়ে যাওয়া।
এ অর্থ আর্ম বা বাহু। হঠাৎ এক হাত দুর্বল হয়ে যাওয়া।
এস অর্থ স্পিচ বা হঠাৎ কথা জড়িয়ে আসা।
টি অর্থ টাইম বা সময়। এসব লক্ষণ দেখামাত্রই যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার চেষ্টা করা।
স্ট্রোকের প্রকারভেদ
মস্তিষ্ক আক্রান্ত হওয়ার ধরনের ওপর ভিত্তি করে স্ট্রোক দুই প্রকারের হতে পারে।
ইসকেমিক স্ট্রোক: মস্তিষ্কের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বেঁধে, অথবা শরীরের কোনো অংশ, বিশেষ করে হৃৎপিণ্ড থেকে জমাট বাঁধা রক্ত মস্তিষ্কের রক্তনালিতে এসে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যে স্ট্রোক হয়, তা ইসকেমিক স্ট্রোক। এ ধরনের স্ট্রোকে রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা কম থাকলেও ভালো হতে দীর্ঘ সময় লাগে। এতে অনেক রোগী স্থায়ী পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে থাকেন।
হেমোরেজিক স্ট্রোক: মস্তিষ্কের কোনো রক্তনালি ফেটে গিয়ে মস্তিষ্কের ভেতর রক্ত ছড়িয়ে পড়লে তা হেমোরেজিক স্ট্রোক। এ ধরনের স্ট্রোকে উপসর্গ নির্ভর করে মস্তিষ্কের কোন অংশ কীভাবে কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার ওপর। অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর উচ্চ রক্তচাপ থাকে এবং রোগী অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে আসেন। এই স্ট্রোকে রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। যাঁরা প্রাথমিক ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেন, দ্বিতীয়বার রক্তক্ষরণের ঝুঁকি তাঁদের কম থাকে। স্থায়ী পঙ্গুত্বের আশঙ্কাও কম।
স্ট্রোকের চিকিৎসা
স্ট্রোকের ধরন ও প্রকারভেদ অনুসারে স্ট্রোকের চিকিৎসা বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্ট্রোকের লক্ষণ খেয়াল করে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। স্ট্রোক চিকিৎসার প্রধান অংশ হলো নার্সিং এবং নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীর সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও পরিমিত ব্যবস্থা গ্রহণ।
ইসকেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে রোগীকে যদি তিন-চার ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে আসা যায়, তাহলে থ্রম্বোলাইসিস (ইনজেকশনের মাধ্যমে জমাটবদ্ধ রক্ত গলিয়ে ফেলা) ও থ্রমবেকটমির (স্টেন্টের মাধ্যমে জমাটবদ্ধ রক্ত বের করে নিয়ে আসা) মাধ্যমে কিছু রোগীর চিকিৎসা করা সম্ভব। অন্যান্য ক্ষেত্রে চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগীর সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে ব্যবস্থাপত্র দেবেন অথবা ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেবেন।
হেমোরেজিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি সার্জারি, সার্জিক্যাল ক্লিপিং অথবা কয়েলিংয়ের মাধ্যমে চিকিৎসা করা সম্ভব। তবে স্ট্রোকের চিকিৎসা সম্পূর্ণ নির্ভর করে রোগীর অবস্থা, স্ট্রোকের ধরন এবং রোগী কত দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছেছেন, তার ওপর।
এ ছাড়া কিছু ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হয়। যেমন শ্বাসনালিতে সমস্যা হলে কিংবা শ্বাস নেওয়া বন্ধ হয়ে গেলে মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাস দিতে হবে। বমি হলে মাথা এক দিকে কাত করে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনো খাবার বা পানি খাওয়ানো যাবে না। অজ্ঞান রোগীর ক্ষেত্রে শ্বাসনালি, শ্বাসপ্রশ্বাস ও রক্ত সঞ্চালন নিয়মিত রাখতে হবে। রোগীকে এক দিকে কাত করে শোয়াতে হবে। চোখ ও মূত্রথলির যত্ন নিতে হবে, প্রয়োজনে ক্যাথেটার ব্যবহার করতে হবে। রোগীর সঙ্গে কমপক্ষে দুজন ব্যক্তিকে হাসপাতালে যেতে হবে। এতে পরীক্ষা ও চিকিৎসা সবকিছুই কিছুটা দ্রুতগতিতে করা সম্ভব হবে।
স্ট্রোকের কারণ
সাধারণত যাঁদের বয়স ৫৫ বছরের বেশি, তাঁদের স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। পুরুষদের মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার হারও বেশি। এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, বহুমূত্র বা ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগী, অতিরিক্ত মোটা ব্যক্তিরা স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। পরিবারে কারও স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস থাকলে, ধূমপান বা অ্যালকোহল পানের অভ্যাস থাকলে, হৃৎপিণ্ডের অসুখ যেমন নাড়ির অস্বাভাবিক স্পন্দন, হৃৎপিণ্ডের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া, হৃৎপিণ্ডের সংক্রমণ থাকলে, কোনো হরমোন থেরাপি অথবা জন্মনিয়ন্ত্রণ ওষুধ সেবন করা, আগে এক বা একাধিক স্ট্রোক অথবা টিআইএ (ট্রানজিট ইসকেমিক অ্যাটাক) হয়ে থাকলে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
প্রতিরোধের উপায়
স্ট্রোক অনেকাংশেই প্রতিরোধযোগ্য। এ জন্য স্ট্রোকের ঝুঁকি সম্পর্কে জানা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পদ্ধতি মেনে চলা উচিত। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পদ্ধতি হলো নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা, নিয়ন্ত্রণে রাখা। অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার না খাওয়া, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা। সঠিক নিয়মে সময়মতো খাবার খাওয়া। নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে সতর্কভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা। প্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রম করা বা সময় করে হাঁটা, সম্ভব হলে হালকা দৌড়ানো। শরীর যেন মুটিয়ে না যায়, অর্থাৎ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। শাকসবজি, ছোট মাছ, সামুদ্রিক মাছ, শুঁটকি, দুধ, আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।
-
Money3 days ago
Consumer Financial Protection Bureau Adds Error Message To Home Page
-
Money2 days ago
Winning Content Strategies For Wealth Managers
-
Australia1 day ago
Tropical Cyclone Zelia intensifies to category 2 storm
-
Asia1 day ago
What you need to know about 2024 YR4, the asteroid that could hit Earth in about eight years’ time
-
Entertainment18 hours ago
Prince Harry and Meghan Markle’s Best Moments and Photos From the 2025 Invictus Games
-
Australia13 hours ago
Tropical Cyclone Zelia intensifies to category five system off Pilbara coast
-
Politics1 day ago
Dozens of religious groups sue to stop Trump admin from arresting migrants in places of worship
-
Entertainment3 days ago
Every Celebrity Who Attended the 2025 Super Bowl: A Guide to the A-Listers at the Big Game