শেয়ার বাজারের হাইলাইটস: বুধবার (৫ জুন) বিএসই সেনসেক্স এবং এনএসই নিফটি ৫০ সূচকগুলোতে ব্যাপক উত্থান-পতনের দেখা গেলো, কারণ বাজারের অংশগ্রহণকারীরা নির্বাচন ফলাফলগুলো পর্যালোচনা করছিলেন। শেয়ার বাজারের সূচকগুলো উর্ধ্বমুখী ছিলো কারণ মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি পরবর্তী সরকার গঠনের জন্য সহযোগীদের সমর্থন নিশ্চিত করেছে। দুই সূচকই ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে বৃহত্তর বাজারগুলিও র্যালিতে সমর্থন জুগিয়েছে।
বেঞ্চমার্ক সূচক সেনসেক্স ২,৩০৩.১৯ পয়েন্ট, বা ৩.২০ শতাংশ বেড়ে ৭৪,৩৮২.২৪ পয়েন্টে বন্ধ হয়, এবং নিফটি ৭৩৫.৮৫ পয়েন্ট, বা ৩.৩৬ শতাংশ বেড়ে ২২,৬২০.৩৫ পয়েন্টে বন্ধ হয়। সেনসেক্স ৯৫৪.৮৮ পয়েন্ট, বা ১.৩২ শতাংশ বেড়ে ৭৩,০৩৩.৯০ পয়েন্টে খোলে, এবং নিফটি ২৪৩.৮০ পয়েন্ট, বা ১.১১ শতাংশ বেড়ে ২২,১২৮.৩০ পয়েন্টে খোলে, যা রাজনৈতিক অস্থিরতা কমার সংকেত দেয়। ইন্ডিয়া ভিআইএক্স, যা ভোলাটিলিটি ইনডেক্স হিসেবে পরিচিত, শেষ সেশনে প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধির পর ৩০-মার্ক অতিক্রম করেছে। আজকের সেশনে, ‘ফিয়ার ইনডেক্স’ ১৮.৮৮ তে কমে এসেছে।
প্রত্যাশা অনুযায়ী, বিনিয়োগকারীরা ভোলাটিলিটি থেকে তাদের পোর্টফোলিওকে সুরক্ষিত করতে কনজাম্পশন স্টকগুলোতে আশ্রয় নেওয়ায় দ্বিতীয় দিনেও পিএসইউ বিক্রয় অব্যাহত ছিল। সেক্টরাল সূচকগুলির মধ্যে, অটো, আইটি, ফার্মা, এফএমসিজি শীর্ষ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে পিএসইউ ব্যাংক, মেটাল, ইনফ্রাস্ট্রাকচার, পিএসই সবচেয়ে বেশি হ্রাস পেয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতামত এবং ভবিষ্যৎ পূর্বাভাস
বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে বর্তমান বাজারের অস্থিরতা এবং উত্থান-পতন রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের কারণে ঘটছে। নির্বাচনের ফলাফল এবং নতুন সরকারের স্থিতিশীলতা বাজারে স্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি, গ্লোবাল ইকোনমিক পলিসি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিস্থিতিও বাজারে প্রভাব ফেলছে।
বিশ্লেষকদের মতে, স্বল্পমেয়াদে শেয়ার বাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা আশা করা যায়, তবে দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে বৈচিত্র্য আনতে হবে। বিশেষ করে, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা এবং এফএমসিজি খাতে বিনিয়োগকারীদের বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।
বিনিয়োগকারীদের জন্য পরামর্শ
বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের জন্য পরামর্শ হচ্ছে, তারা যেন বাজারের উত্থান-পতনের দিকে অতিরিক্ত মনোযোগ না দেন এবং দীর্ঘমেয়াদে সুদৃঢ় বিনিয়োগ কৌশল গ্রহণ করেন। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে, বিনিয়োগকারীরা যেন তাদের পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যপূর্ণ করে তোলেন এবং সেফ স্টকগুলোতে বিনিয়োগ করে বাজারের অস্থিরতা থেকে সুরক্ষা পান।
ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি
বাজার বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে, নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে এবং নতুন সরকারের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরে বাজার আরও স্থিতিশীল হতে পারে। বিভিন্ন সেক্টরে সরকারি নীতিমালা এবং বিনিয়োগের প্রভাব বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, গ্লোবাল মার্কেটের পরিবর্তন এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখা প্রয়োজন, কারণ এদের প্রভাবও ভারতের শেয়ার বাজারে পরিলক্ষিত হতে পারে।
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য এই সময়টা গুরুত্বপুর্ণ, কারণ তারা বর্তমান অবস্থার ভিত্তিতে তাদের বিনিয়োগ কৌশল ঠিক করতে পারেন। পরবর্তী সময়ে বাজারের প্রবণতা বুঝতে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্লেষকদের পরামর্শ মেনে চলা প্রয়োজন।
এই সময়ে বাজারের উত্থান-পতন এবং ভবিষ্যৎ পূর্বাভাসগুলো বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করে তাদের বিনিয়োগ কৌশল সাজানো প্রয়োজন।