বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন ‘অটোপাইলটের’ মাধ্যমে চলছে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, চলমান সংকটে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা অপর্যাপ্ত এবং এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বিচ্ছিন্নভাবে। দেশের অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা প্রশাসননির্ভর হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ শনিবার প্রথম আলো আয়োজিত ‘অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ ও বাজেট প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে আজ সকালে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন। বৈঠকে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বর্তমানে চলছে প্রশাসননির্ভর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা। অর্থ ও মুদ্রানীতি-সম্পর্কিত সরকারের করা আইন আছে। সেখানে যেসব কাজ করার কথা বলা আছে, সেগুলোও সরকার করছে না। ফলে যেটা হচ্ছে, সমস্যা তৈরি হওয়ার পর নীতি-ব্যবস্থাগুলো সরকারের দিক থেকে প্রতিক্রিয়ার মতো আসে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এখন একটি ‘অটোপাইলটের’ হাতে আছে। এই অটোপাইলট স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে। এটা তো হতে পারে না।
সিপিডির বিশেষ এই ফেলো আরও বলেন, ‘তথ্য–উপাত্তের প্রতি অবজ্ঞা এবং অনেক ক্ষেত্রে অন্ধত্ব আমাদের এখানে নিয়ে এসেছে। আমরা যে উন্নয়ন–উপাখ্যান তৈরি করেছি, সেই উন্নয়ন–উপাখ্যানের সঙ্গে অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য যদি সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, তখন তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণকেও বিভিন্ন ধরনের অপমানসূচক বক্তব্য দিয়ে ছোট করা হয়। তবে অনিচ্ছা সত্ত্বেও সরকার এখন মেনে নিচ্ছে অর্থনীতিতে সংকট বিরাজমান। আমরা আগে থেকেই বলে আসছি, সংকট বিরাজমান, এখন বিকাশমান।’
দেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধিকে ‘অনন্য দেবতার’ অবস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এই অবস্থান থেকে ওনাকে (প্রবৃদ্ধি) সরাতে হবে। এখন অর্থনৈতিক সামষ্টিক স্থিতিশীলতাকে গুরুত্ব দিতে হবে। সমস্যার সমাধানে মধ্য মেয়াদের চেয়ে স্বল্প মেয়াদে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা হতে হবে দুই থেকে তিন বছর মেয়াদি।